The Search Of The Western Ghats - Part 1

 বঙ্গনারীর পশ্চিমঘাট অন্বেষণ

প্রথম পর্ব
আমার বন্ধুরা বলে আমি হিমালয় আসক্ত, ভুল কিছু বলেনা , হিমালয়ের বিশালতার কাছে হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে আছে অসীম আনন্দ তবে পর পর হিমালয়ের কোলে আশ্রয় নিতে নিতে ভাবলাম স্বাদটা একটু পাল্টে পশ্চিম ঘাট পর্বতমালা অন্বেষণে বেরোলে কেমন হয়? যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। পশ্চিমঘাটের পার্বত্য শহর নিয়ে পড়াশোনা শুরু হলো। একটু ঘাটাঘাটি করতেই যে নাম গুলি উঠে এলো সেগুলি হলো কুর্গ, ওয়্যানড, পনমুদি, মুন্নার, মহাবালেস্বর ইত্যাদি। এর মধ্যে কুর্গ ও ওয়ানড এর মধ্যে যোগাযোগ ভালো তাই এই দুটি পার্বত্য শহরের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম।
ঝোলায় মোট সাড়ে ছদিন ছুটি, মর্নিং শিফট করে চারটে নাগাদ বেড়িয়ে পড়লাম এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। পাঁচদিন আগে কাটা কলকাতা ব্যাঙ্গালোরে ইন্ডিগো উড়োজাহাজের খরচ পড়লো কমবেশি 8000 টাকা। সন্ধ্যে সাতটা পঞ্চাশে ছেড়ে ব্যাঙ্গালোর পৌঁছলাম রাত দশটা চল্লিশ। ব্যাঙ্গালোর থেকে আমার রাতের বাস ভোর একটায় তাই এয়ারপোর্টের মধ্যেই একটি CCD তে কফি , কলাচিপ্স ও কফি বিসকটি সহযোগে কাটিয়ে দিলাম রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্তও। বাস ধরার উদ্যেশ্যে আগমন দরজার বাইরে এসে দেখি বিশাল হৈ হৈ ব্যাপার। এত রাতে এত শোরগোল দিল্লি ছাড়া অন্য এয়ারপোর্ট গুলিতে দেখা যায়না। বাইরে প্রচুর খাওয়া দাওয়ার ব্যাপক ব্যবস্থা এবং দাম নাগালের মধ্যে। আমি যখনই কোথাও বেড়াতে যাই স্থানীয় খাবার চেখে দেখাটা আমার অবশ্য কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। সুতরাং এত রকম খাবারের মধ্যে হারিয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। যেসমস্ত খাবার গুলি আমি চেখে দেখলাম সেগুলি হলো হাতির শুঁড় আকৃতি ব্লু বেরি মাফিন, তিল ও গুড়ের কেক, একটি বিশেষ ঠান্ডা তরল যা ফিল্টার কফি ও ফলের রস দ্বারা নির্মিত। খেতে খেতে বাস স্ট্যান্ডের দিকে চোখ পড়তেই মনে পড়লো আমার বাস একটা দশে, বাকি খাবার গুছিয়ে নিয়ে টিকিট কাউন্টারের দিকে এগুলাম। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ফ্লাই বাসে এয়ারপোর্ট থেকে কুর্গ এর টিকিট কাটলাম পড়লো 950 টাকা। কাউন্টারে অনুরোধ করলাম একা যাত্রী তাই একটু বুঝে শুনে আমার পাশের যাত্রীর টিকিটিই দিতে। সব শুনে একচোট হেসে আমার দাদাভাইটি কন্নড় ভাষায় কি যে বললেন তা মাথার ওপর দিয়ে চলে গেলেও যাত্রা শুরু হওয়ার পর সহজেই অনুমান করলাম।
বিশাল বাসের পেটে আমার লাগেজটি চালান করে বাসে উঠলাম, সিট নাম্বার খুঁজে দেখলাম একটি জানালা যুক্ত সিট আমার জন্য বরাদ্দ হয়েছে। সিট টি অসম্ভব বিলাসবহুল। মনে পড়ে গেল একবার কোনো এক বিখ্যাত বাংলা ছবির টিকিট না পেয়ে গোল্ড ক্লাস কেটে ছিলাম, এবং সেখানে প্রায় শুয়ে শুয়ে সিনেমাটি দেখার সুযোগ হয়েছিল। এর আগেও সেমি স্লিপার বসে উঠেছি তবে Fly বাস এর সিট সব কিছুর উর্ধে মনে হলো।
বাসে আরাম করে গুছিয়ে বসলাম, পুরো বাস ভর্তি শুধু আমার পাশের সিটটি ছাড়া। নির্দিষ্টি সময়ে বাস ছাড়লো, রাতের শহর উপভোগ করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। মাইসরে ঘুম ভেঙে গেল, দেখলাম আমার পাশের সিটটি ফাঁকা। টিকিট কাউন্টারে বসে থাকা দাদার হাসির কারণ অনুমান করে মনে মনে তাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে আবার ঘুমের দেশে প্রবেশ করলাম। সকাল বেলা সুয্যিমামার কৃপায় চোখ মেলে বুঝলাম মাদিকেরি পৌঁছে গেছি, সকাল তখন সাতটা কুড়ি।
ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
ক্রমশ








Previous Post Next Post

Contact Form